Tuesday, September 3, 2019

মানচিত্রের মতন- পৃথিবী আমার

বরফ দেশের পেঙ্গুইন বাচ্চাদের উচ্ছ্বাসের মতন-
তোমার কপালের ‘পর
সকালে প্রথম চুমু খায় এন্টার্কটিকা।
পেটের উপর ভূ-মধ্যসাগর, আল্পস আন্দিজ;
সূতা ভিজে যাওয়া লবণ ঘামে-
আফ্রিকা-ব্রাজিল রেইন ফরেস্ট।
দুপুরের ডিহাইড্রেশনে-
বুকের উপর মিশরীয় সভ্যতা।
তপ্ত রোদে- হৃদয়ে যখন রক্তারক্তি
তুমি তখন, ক্ষত বিক্ষত ইরাক সিরিয়া-
প্যালেস্টাইন- জেরুজালেম।
সকালে আটলান্টিক, কুইন্সল্যান্ড-
বিকেলে উত্তর কোলকাতা, শিলং – দার্জিলিং।
পাহাড়িয়া রাস্তা, সাঁওতাল গাঁ-
ঠিক যেন, কপালের দু’পাশ থেকে বেয়ে নামা আসা পার্সি নারীদের জুলফি।
সন্ধ্যায় –
পায়ের উপর জল এসে চুমু খেতে খেতে
নখের ডগা বদলে গেছে প্রবাল প্রাচীরে।
লোমকূপে জমা সামুদ্রিক লবণ
চুল উড়ে যাওয়া বেতাল বাতাসে-
তুমি তখন
উত্তর আমেরিকান ওশেনগার্ল কিংবা বাংলাদেশে ‘সমুদ্রকন্যা’।
দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে –
আন্দামান নিকোবর- ধন-মানিক দ্বীপপুঞ্জে
গলদা চিংড়ির লার্ভার মতন থলথলে
কখনওবা ইলিশ ডিমের মতন দাঁতের নিচে ঝুড়ি-ভাঙা জীবন।
স্বাধীনের আগে – পরে
পাক-মোটর – বাংলামোটর
স্থল বন্দর, সমুদ্র বন্দর-
মংলা- ভেনিস- বিশাখাপত্তনম- চিটাগাং;
এত বৈচিত্র্য
এত জীবন
পৃথিবীর মতন –
প্রেমিকার মতন,
ক্ষত চিহ্নের মতন
করে যাচ্ছ ধারণ শরীরে তোমার,
জন্ম দাগের মতন তেতিয়ে ওঠা সীমান্ত রেখা।
শরীর মানচিত্রের মতন-
ছোট বড় অসংখ্য দাগে সয়লাব;
বিভাজন রেখা জমে জমে সাত সাতটি মহাদেশ নিয়ে
তুমি হয়ে গেছ দ্বাবিংশ শতাব্দীতে পৃথিবী আমার।

SHARE THIS

0 comments: